শুক্রবার || ২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
যেভাবে কারামুক্তি হলো কালিগঞ্জের সাজাপ্রাপ্ত বেসরকারি নারী উন্নয়ন সংগঠন “প্রেরণা’র নির্বাহী পরিচালক শম্পা গোস্বামী
প্রকাশিতঃ ১৪ অক্টোবর ২০২৪, সোম, ১০:৪৪ অপরাহ্ণ । পঠিত হয়েছে ১৬ বার।
জেলা পরিষদের ইজারা নেওয়া জায়গায় একটি মেহগনি গাছ অনুমতি ছাড়াই কেটে ফেলার অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতে দুইদিনের সাজাপ্রাপ্ত বেসরকারি নারী উন্নয়ন সংস্থা “প্রেরণা’ এর নির্বাহী পরিচালক স্কুল শিক্ষক শম্পা গোস্বামী কারাগারে দুই ঘণ্টা অবস্থান করার পর মুক্তি পেয়েছেন। বৃহষ্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় কারাগারে ঢোকার দুই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
শম্পা গোস্বামী দেবহাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেবহাটা গ্রামের আনন্দ চ্যাটার্জীর স্ত্রী।
কালিগঞ্জ উপজেলার সহকারি কমিশনারের কার্যালয় থেকে (ভ‚মি) জানা গেছে, পূর্ব নারায়নপুরের পুরাতন সেটেলমেন্ট অফিসের পাশে জেলা পরিষদের সাত শতক জমি ইজারা নেন বেসরকারি সংগঠন প্রেরণা এর নির্বাহী পরিচালক ও মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা শম্পা গোস্বামী ২০২৩ সালে ডিসিআর নেন। এরপর থেকে তিনি সেখানে প্রাচীর দেন। সম্প্রতি তিনি ওই জমিতে প্রেরণা অফিস বানানোর প্রস্ততি নিচ্ছিলেন।
কালিগঞ্জের সার্জিকাল ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সালাম জানান, শম্পা গোস্বামী তার অফিস ভবন বানানোর জন্য বুধবার থেকে প্রাচীরের ভিতর গাছ গাছালি কেটে পরিষ্কার করেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা বাধা দেন। বৃহষ্পতিবার তিনি শ্রমিকদের নিয়ে আবারো একটি মেহগণি গাছ কাটেন। প্রাচীরের পূর্ব পাশের ফটকের বাইরে কয়েকটি জিওল গাছ ও দুটি সজিনা গাছের ডাল কাটে তারা। এ নিয়ে তিনিসহ স্থানীয়রা আপত্তি জানালে শম্পা গোস্বামী রুঢ় আচরণ করেন। একপর্যায়ে তারা বিষয়টি সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) অমিত কুমার বিশ্বাসকে অবহিত করেন। বৃহষ্পতিবার দুপুর দুটোর দিকে সহকারি কমিশনারের নির্দেশে ভাড়াসিমলা ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের তহশীলদারের পক্ষে একজন পিওন ঘটনাস্থলে এসে গাছ কাটতে বাধা দেন। বাধা না মানার বিষয়টি জানানো হয় সহকারি কমিশনারকে। সহকারি কমিশনার ঘটনাস্থলে এসে সরকারি মেহগণি গাছ কাটার সত্যতা পান। অনুমতি না থাকার পরও গাছ কাটায় শম্পা গোস্বামী নিঃশর্ত ক্ষমা চান। এরপর ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনী। একপর্য়ায়ে তিন মিনিটের আল্টিমেটাম দিয়ে জনগনকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন তারা। বিকেল তিনটার দিকে সহকারি কমিশনার অমিত কুমার বিশ্বাস সরকারি গাছ কাটার অপরাধে শম্পা গোস্বামীকে দুই দিনের বিনা¤্রম কারাদÐ ও ১০০ টাকা জরিমানা করেন। এরপর শম্পা গোস্বামীকে নিয়ে যাওয়া হয় কালিগঞ্জ থানায়। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তাকে তাৎক্ষণিক পুলিশ বহনকারি পিকআপে করে জেলা কারাফটকে নিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
সাতক্ষীরা কারাগারের সুপারইনটেনডেন্ট মোঃ এনায়েতুল্লাহ শুক্রবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, কালিগঞ্জের ভ্রাম্যমান আদালতে দুই দিনের বিনাশ্রম কারাদÐপ্রাপ্ত আসামী শম্পা গোস্বামীকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কারাগারে আনা হয়। দুই ঘণ্টা কারাগারে থাকার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। কারা আইন অনুযায়ি দুই দিনের সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে কারাগারে আনার পরবর্তী দুই দিন ছুটি থাকলে তাকে ওই দিনই মুক্তি দিতে হবে। সে অনুযায়ি শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।