Dakhinadarpon কংগ্রেসের হার ‘ইন্ডিয়া জোটের’ জন্য কত বড় ধাক্কা? – Dakhinadarpon
Image

সোমবার || ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

কংগ্রেসের হার ‘ইন্ডিয়া জোটের’ জন্য কত বড় ধাক্কা?

প্রকাশিতঃ ৪ ডিসেম্বর ২০২৩, সোম, ১১:২০ অপরাহ্ণ । পঠিত হয়েছে ১৬৮ বার।

কংগ্রেসের হার ‘ইন্ডিয়া জোটের’ জন্য কত বড় ধাক্কা?

ভারতের পাঁচটি রাজ্যে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থানের ও তেলেঙ্গানার ফলাফল ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে।

আজ মিজরামের ৪০টি বিধানসভা আসনের ভোট গণনা চলছে।

এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, শাসক দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)-কে পরাজিত করে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মিজোরামের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন লালডুহোমা। ৪০টি আসনের মধ্যে জেডপিএম জিতেছে ২৭টিতে। ১০ টি আসনে জিতেছে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গার দল।

এখানেও মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস। একটি আসনে জিতছে কংগ্রেস আর বিজেপি ২টিতে।

মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে বিজেপি জিতেছে। তারা মধ্যপ্রদেশে সরকার বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে এবং একই সঙ্গে কংগ্রেসকে পরাজিত করে প্রতিবেশী ছত্তিশগড়ে ক্ষমতায় ফিরেও আসতে পেরেছে।

অন্যদিকে, তেলেঙ্গানায় জিতে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করতে চলেছে কংগ্রেস।

যদিও রাজস্থানের ‘পরিবর্তনের প্রথা’ বদলাতে চাওয়া কংগ্রেস সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। তারা শুধু সফল হয়েছে তেলেঙ্গানায়। ভারতের এই নতুন রাজ্যে প্রথমবার বিআরএস (সাবেক টিআরএস) ছাড়া অন্য কোনও দল সরকার গঠন করতে চলেছে।

এই পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে আসন্ন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল যেখানে ২৮ টি বিরোধী দল বিজেপিকে জয় এবং ক্ষমতা থেকে অপসারণের উদ্দেশ্যে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া) নামে একটি জোট গঠন করেছিল।সেপ্টেম্বর মাসে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে মুম্বইতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই হারের পর ‘ইন্ডিয়া জোটে’ শরিকদলগুলির মধ্যে অনেকেই কংগ্রেসের নেতৃত্বের বিষয়ে ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সরাসরি নিশানা দেগেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। কোনও শরিকদল আবার মনে করছে এই পরাজয় ইন্ডিয়া জোটের উপর প্রভাব ফেলবে না।

এদিন বিধানসভায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কংগ্রেসের পরাজয় মানুষের পরাজয় নয়। আমি মনে করি ইন্ডিয়া জোট একসঙ্গে কাজ করবে, জিতবে।” তাঁর দল তৃণমূলও ২৮টি দলের মধ্যে একটি যারা ‘ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স’ অংশ।

অন্যদিকে, কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আগামী ছয়ই ডিসেম্বর দিল্লিতে ভারতের শরিক দলগুলির একটি বৈঠক ডেকেছেন।

ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক

ইন্ডিয়া জোটের শেষ বৈঠক হয়েছিল আগস্ট মাসের শেষের দিকে (৩১ আগস্ট -১ সেপ্টেম্বর) মুম্বইতে। সে সময়ে, একাধিকবার আলোচনার পরেও কংগ্রেস হাইকমান্ড সারা দেশে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে ‘উৎসাহ দেখায়নি’ বলেই শরকদলগুলির মধ্যে অনেকে অভিযোগ জানিয়েছিল। এই কারণে আসন ভাগাভাগির কাজ অসমাপ্তই থেকে গেছে৷

মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির আসন ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছিলেন পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব৷ রাজ্যের ২৩০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে তাঁর নিজের দলের জন্য ছয়টি আসন দাবি করেছিলেন তিনি৷

কংগ্রেস নেতৃত্ব সেই প্রস্তাবে প্রাথমিক সম্মতি জানালেও পরে তা খারিজ করে৷ এর জেরে ক্ষুব্ধ অখিলেশ রাজ্যের ৭১টি আসনে তাঁদের প্রার্থীদের দাঁড় করান৷ একইসঙ্গে নয়টি আসনে অন্যান্য ছোট দলকে তাঁর দল সমর্থন করে৷

সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর যে বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে, তার গুরুত্ব আরও বেড়েছে। নির্বাচনের ফলাফল জোট এবং এর ভবিষ্যতের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

‘ক্ষুব্ধ’ শরিকদল

কংগ্রেসের ‘ভরাডুবির’ ফলে শরিকদলের অনেকে ‘ক্ষোভ’ উগড়ে দিয়েছে। তারা কংগ্রেসের মনোভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর সহকারী সভাপতি ওমর আবদুল্লা কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন।

তাঁর কথায়, নির্বাচনের সময় কংগ্রেস যা বলেছিল তা ফাঁকা আওয়াজ বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর পাশাপাশি জোটের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগও তোলেন তিনি।

“আগামী ছয়ই ডিসেম্বর ইন্ডিয়া জোটের সকলকে নৈশভোজে ডেকেছে। যাক তিনমাস পরে অন্তত ইন্ডিয়া জোটের কথা মনে পড়েছে ওদের। এখন দেখা যাক কী আলোচনা হয়,” মি আব্দুল্লা বলেন।

একইভাবে, জনতা দলও কংগ্রেসের সমালোচনা করেছে। দলের মুখপাত্র কেসি ত্যাগী বলেছেন, এই নির্বাচনে বিরোধী দল হিসাবে কোনও ইন্ডিয়া জোটের উপস্থিতি ছিলই না।

তিনি বলেছিলেন যে ঐতিহাসিকভাবে এই রাজ্যগুলিতে সমাজতান্ত্রিক দলগুলি ছিল, কিন্তু কংগ্রেস কখনই ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য শরিকদে্র সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি বা পরামর্শ চায়নি।

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনী প্রচারের সময় ভোপালে ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্সের একটি সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দলীয় নেতৃত্ব এই সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।”

অনদিকে, সাম্প্রতিক এই নির্বাচনী ফলাফলে কংগ্রসের এই হার তৃণমূল কংগ্রেসকে সুযোগ করে দিয়েছে নেতৃত্বের দাবিদার হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার। আজ দলের প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা অধিবেশনে এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন।

এর আগে, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এক্স সমাজমাধ্যমে (সাবেক টুইটার) তিনটি রাজ্যে বিজেপির জয়ের পরিবর্তে কংগ্রেসের ‘হার’ বলে উল্লেখ করেছেন। ‘ওই তিন রাজ্যে বিজেপির জয়ের থেকে বড় হল কংগ্রেসের হার।’

যদিও এই ফলাফল ২০২৪ এর আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘টিমসি এমন একটি দল যারা’ দেশকে বিজেপি মুক্ত করার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে পারে।’

‘যে সুযোগ হারাল’

ভারত জোট প্রথম দিন থেকেই অনেক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। উদাহরণস্বরূপ, এই অংশগ্রহণকারী দলগুলির বেশ কয়েকটি একাধিক রাজ্যে একে অপরের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, তারা একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত ও অবস্থানও ভিন্ন।

নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রবীণ সাংবাদিক সীমা চিশতী বলছেন, এই নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোট ও কংগ্রেস একটি সুযোগ হারিয়েছে।

তাঁর মতে, এই নির্বাচনগুলি বিরোধী দলগুলিকে একত্রিত করার এবং একটি রাজনৈতিক পরিবর্তনের উদ্যোগী হওয়ার সুযোগ ছিল, যা ওই জোটকে শক্তিশালীও করতে পারত।

বিবিসি হিন্দি পডকাস্ট-এ তিনি বলেন, কংগ্রেস ছোট দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে যে সব সুবিধা পেতে পারত, তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

তিনি বলেন, “জোট গঠনের সঙ্গে সঙ্গে যে রাজনৈতিক আকৃতির যে বদল হয়, তা হয়নি। তেলেঙ্গানার মতো, তারা সিপিআইয়ের সাথে জোট করেছে কিন্তু সিপিএমের সাথে নয়। তাই এভাবে বাকি জায়গাগুলোতে ছোট ছোট দলগুলোকে একত্রিত করার সুবিধা নিতে পারেনি তারা।”

তাঁর কথায়, “অজিত যোগীর দলের (জনতা কংগ্রেস ছত্তিশগড়) ভোট যেমন বিজেপির হাতে চলে গেছে। একইভাবে রাজস্থানেও ভারত আদিবাসী পার্টির (বিএপি) সঙ্গে জোট করা যেত। অখিলেশ যাদবের দল সমাজবাদী পার্টি যদি মধ্যপ্রদেশে নির্বাচনে লড়তে চাইত, তাহলে এক বা দুটি আসন তাদের দেওয়া যেত।”

তিনি বলেন, “যদি কিছু আসন বাম দলগুলিকে দেওয়া হত, তাহলে তারা নতুন রাজনীতি আনতে পারত। কিন্তু আপনি সেই লাইট-হিন্দুত্বের মধ্যে পড়ে আছেন। আপনরা হিন্দুত্বকে চ্যালেঞ্জ করেননি, বা বিষয়টি নিয়ে খেলতেও পারেননি। তাহলে কেন কেউ আপনাদের বেছে নেবে?”

প্রবীণ সাংবাদিক নলিন বর্মা বলছেন, তেলেঙ্গানায় আঞ্চলিক আন্দোলন হওয়ায় কংগ্রেস লাভবান হয়েছে।

বিবিসি হিন্দি পডকাস্ট-এ তিনি ফলাফল বিশ্লেষণ করে বলেন, “মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে ছোট দলগুলিকে একত্রিত করা হলে উপকার হত। উদাহরণস্বরূপ, যদি অখিলেশের দলকে (মধ্যপ্রদেশে) সুযোগ দেওয়া হত, তবে তারা বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের কাঠামোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করার সুযোগ দিতে পারত। তবে এটার জন্য দীর্ঘ লড়াই করতে হবে কারণ সেখানে তেমন কোনও কাঠামো নেই।”

বর্ষীয়ান সাংবাদিক নলিন বর্মা বলছেন, এই বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে ইন্ডিয়া জোটের ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করা যায় না এবং তার ভবিষ্যত নিয়েও কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

“এই জোটের কোন অংশীদাররা মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ের হিন্দি বেল্ট রাজ্যগুলিতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল? শুধুমাত্র কংগ্রেস। এটা শুধুই কংগ্রেস বনাম বিজেপির লড়াই ছিল। এটা ইন্ডিয়া ভারত পরীক্ষা ছিল না,” তিনি বলেছেন।

নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কিত বিবিসি হিন্দির বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাজ অভিযানের নেতা এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ যোগেন্দ্র যাদব। তিনি অবশ্য বলেছেন নির্বাচনের এই ফলাফল খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি।

তিনি বলেন, “সংখ্যার নিরিখে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি, কারণ তিনটি রাজ্যে বিজেপি আগেও জিতেছে এবং এবারও। তবে বিজেপিকে হারানোর সম্ভাবনা আগের চেয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে।”

যোগেন্দ্র যাদব বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে যা হয়েছে, লোকসভাতেও তাই হবে, তেমনটা নয়। কিন্তু যারা ক্ষমতার পরিবর্তন চান, তাদের জন্য কাজটা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।”

তাঁর কথায়, “কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে সরাতে হলে ভারতের উত্তরাঞ্চল, যা গুজরাত থেকে শুরু করে বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত, সেখানে বিজেপিকে হারাতে হবে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে কংগ্রেসের তিনটি থেকে চারটি লোকসভা আসন রয়েছে। এখানে কিছু আসন জেতা কংগ্রেসের পক্ষে খুবই প্রয়োজনীয়। তবে আজকের পরে এই সম্ভাবনা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।”

‘আসন ভাগাভাগি করা সহজ’

কংগ্রেস নেতারা এই নির্বাচনে প্রায় প্রত্যেক মঞ্চ থেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে দল ক্ষমতায় এলে জাতিভিত্তিক আদমশুমারি করা হবে।

বিরোধী দলগুলির জোট – ‘ইন্ডিয়া আলায়েন্স’-এর কাছেও এটি একটি বড় বিষয় ছিল। এ বছরের ১৮ই জুলাই বেঙ্গালুরুতে এক বৈঠকের পর ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে জাতিগত আদমশুমারির দাবি জানায়।

বিজেপি এই ধরনের আদমশুমারির বিষষয়টিতে অস্বস্তিবোধ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের আশঙ্কা ছিল এতে তাদের উচ্চ বর্ণের ঐতিহ্যবাহী হিন্দু ভোটারদের বিরক্ত করতে পারেন।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলগুলি এখনও জাতিভিত্তিক আদমশুমারিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসাবে মনে করছে।

এই নির্বাচনগুলি কি ইস্যুটির একটি লিটমাস পরীক্ষা ছিল কারণ এই রাজ্যগুলিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ওবিসি ভোটার রয়েছে?

প্রবীণ সাংবাদিক নলিন ভার্মা বলছেন, “মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে সমাজতান্ত্রিক বা অনগ্রসর শ্রেণির আন্দোলন ততটা প্রভাব ফেলেনি, যতটা উত্তরপ্রদেশ বা বিহারে হয়েছে। বিহার ও উত্তরপ্রদেশে আঞ্চলিক দলগুলি শক্তিশালী। জাতিগত আদমশুমারির ইস্যুতে তাদের একটি ক্যাডার রয়েছে।”

নলিন ভার্মা বলেন, “বিহারে কার্পুরী ঠাকুর ও লালুপ্রসাদ যাদব বা উত্তরপ্রদেশে লোহিয়া বা মুলায়ম সিং যাদব যেভাবে লড়াই করেছিলেন, এই রাজ্যগুলিতে তা হয়নি। সুতরাং, বিজেপি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটি ফাঁকা জায়গা খুঁজে পেয়েছে। কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোট গঠনের পরেই অনগ্রসর শ্রেণি আন্দোলনের কথা বলেছিল।”

প্রবীণ সাংবাদিক সীমা চিশতীও মনে করেন, উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের তুলনায় রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে জাতিগত আদমশুমারির বিষয়ে তেমন সচেতনতা নেই।

তিনি বলেন, “রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে এমন কোনও প্রভাবশালী জাতি নেই যারা এই বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলতে পারে। এখানে জাতিগত আদমশুমারির প্রভাব খুব বেশি নয় এটা আমরা বলতে পারি যে, কারণ বিষয়টি এখানে নতুন। অন্যদিকে বিহারে এই বিষয়টি ইতিমধ্যে সংগঠিত হয়েছে।”

মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্সের বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং স্বরাজ ইন্ডিয়ার নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলছেন, নির্বাচনের ফলাফল ইন্ডিয়া জোটের কাজকে আরও সহজ করে তুলবে।

তিনি বলেন, ‘এই পরাজয় ইন্ডিয়া আলায়েন্সের অভ্যন্তরীণ সমীকরণকে কিছুটা সহজ করে তুলবে। কারণ কংগ্রেস যদি আরও শক্তিশালী ভাবে আসত, সমস্যা আরও বাড়তে পারত। এবং সেটা কিন্তু কংগ্রেস এবং অন্যান্য দল দুজনের জন্যই। কিন্তু আমি মনে করি এই বিপর্যয়ের পরে কংগ্রেস এবং অন্যান্য দলগুলি এবার উপলব্ধি করবে যে এই জোটের বিষয়ে এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার উপর নজর দিতে হবে।”

যোগেন্দ্র যাদব বলেন, “যে সব রাজ্যে বিজেপি জিতেছে, সেখানে ইন্ডিয়া জোটের প্রভাব উল্লেখযোগ্য নয়। তবে কংগ্রেস যদি রাজস্থানে সিপিএম ও বিএপির সঙ্গে জোট করত, তাহলে একতরফা জয় দেখা যেত না।”

“মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, বিহার, আসাম ও উত্তরপ্রদেশে এই জোটের প্রয়োজন বেশি। সেখানে সত্যিকারের কাজ হবে। আমি মনে করি, এই ফলাফলের কারণে এই জোটে আসন ভাগাভাগির কাজ এখন আগের চেয়ে সহজ হবে,” এমনটাই জানিয়েছেন যোগেন্দ্র যাদব।

তবে এই অনুমান কতটা সঠিক এবং কতটা ভুল, তা ছয়ই ডিসেম্বরের বৈঠকের পরই পরিষ্কার হবে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

রহস্যময় তালেবান নেতা মোল্লা ওমর, যাকে যুক্তরাষ্ট্র খুঁজে পায়নি

প্রকাশিতঃ ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গল, ১১:২২ অপরাহ্ণ

আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে কী ঘটেছিল?

প্রকাশিতঃ ২ ডিসেম্বর ২০২৪, সোম, ১১:৩৮ অপরাহ্ণ

নেতানিয়াহু-হামাস নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির পরোয়ানা: আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিতঃ ২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহঃ, ১১:১৯ অপরাহ্ণ

আসামের করিমগঞ্জ নাম বদলে শ্রীভূমি, রবীন্দ্রনাথের আদৌ কোনও যোগ...

প্রকাশিতঃ ২০ নভেম্বর ২০২৪, বুধ, ১১:১৭ অপরাহ্ণ

পাকিস্তানের করাচি থেকে আসা জাহাজটির কন্টেইনারে যা যা আছে

প্রকাশিতঃ ১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবি, ১০:৩৯ অপরাহ্ণ

ইরানে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মানবাধিকার কর্মীর আত্মহত্যা

প্রকাশিতঃ ১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহঃ, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ

ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর বন্ধুত্ব কতটা ‘মুখে’ আর কতটা ‘কাজে’?

প্রকাশিতঃ ১০ নভেম্বর ২০২৪, রবি, ১১:২৪ অপরাহ্ণ