রবিবার || ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
হামাস-ফাতাহ বৈরিতা শুরু হয়েছিল যেভাবে
প্রকাশিতঃ ১৭ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গল, ১২:১৭ পূর্বাহ্ণ । পঠিত হয়েছে ১১৪ বার।
সম্প্রতি ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং এর জবাবে গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার পাল্টা হামলার ঘটনায় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে বিক্ষোভের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে।
যদিও আসল ঘটনা হল, ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কয়েক দশক ধরে মতবিরোধ চলছে।
এ কারণেই তাদের পক্ষে নিজেদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মতো প্রধান লক্ষ্যগুলো অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে মনে করা হয়।
ফিলিস্তিনের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল ২০০৭ সালের জুন মাসে। সে সময় গাজা উপত্যকায় হামাস এবং ফাতাহর লড়াইয়ে বহু মানুষ হতাহত হয়েছিল।
এই সশস্ত্র সংঘাত, “গাজার যুদ্ধ” নামেও পরিচিত। এই লড়াই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে এত গভীর বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল যে সেই সংঘাতের চিহ্ন আজও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ফাতাহ হেরে যাওয়ার পর এবং হামাস যোদ্ধারা গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই সহিংসতা শুরু হয়।
ওই সংঘাতের ফলে ফিলিস্তিনের যৌথ সরকারের বিলুপ্তি ঘটে এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শাসনভার ভাগ হয়ে যায়।
ফিলিস্তিনের দুই অংশ- পশ্চিম তীর ফাতাহ আর গাজা হামাসের শাসনে চলে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক অধ্যাপক নাথান ব্রাউন বিবিসি মুন্ডোকে বলেছেন, “হামাস এবং ফাতাহ’র মধ্যে ২০০৭ সালের সংঘাতে প্রচুর রক্তপাত হয়েছিল, তারপর থেকে তাদের মধ্যে তিক্ততা আরও তীব্র হয়। সেই মুহূর্ত থেকে, ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং তাদের নেতারা ভিন্ন ভিন্ন পথ অনুসরণ করে।”
তবে তারও অনেক আগে থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে কোন্দল চলছিল বলে তিনি জানান।
হামাস ও ফাতাহ প্রতিষ্ঠা
ফিলিস্তিনের বিভিন্ন ইসলামী গোষ্ঠীর মধ্যে হামাস হল সবচেয়ে বড় এবং ‘হামাস’ নামটি এসেছে আরবি ভাষায় ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত রূপ থেকে।
হামাসের আবির্ভাব হয়েছিল ১৯৮৭ সালে, ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বিদ্রোহ বা প্রথম ইন্দিফাদার মাধ্যমে।
সে সময় এটি মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের ফিলিস্তিনি শাখা হিসেবে পরিচিত ছিল।
এরপর ১৯৯১ সালে মোহাম্মদ দেইফের নেতৃত্বে হামাসের মিলিশিয়া বা সশস্ত্র বাহিনী, আল কাসাম ব্রিগেড প্রতিষ্ঠিত হয়। মোহাম্মদ দেইফ ছিলেন ওই ব্রিগেডের কমান্ডার।
হামাস বা কিছু ক্ষেত্রে আল কাসাম ব্রিগেডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে চিহ্নিত করেছে ইসরায়েল এবং পশ্চিমা শক্তি।
হামাস হল ইসলামের সুন্নি অনুসারীদের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী যাকে ইরানসহ বিভিন্ন দেশ সমর্থন দিয়ে আসছে। আজ থেকে ১৬ বছর আগে গাজা উপত্যকা থেকে ফাতাহকে হটিয়ে দেয়ার পর তারাই গাজা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
এরপর থেকেই গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। সেখানে পণ্য ও সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত করতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
ফাতাহ হল, প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল লিবারেশন মুভমেন্টের আরবি অনুবাদের বিপরীত সংক্ষিপ্ত রূপ এবং ফিলিস্তিনের বৃহত্তম ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল।
এই দলটি পিএলও (প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন) এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধান চালিকা শক্তি।
১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের ঠিক এক দশক পর ১৯৫৯ সালে ফিলিস্তিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতসহ সেখানকার আন্দোলন কর্মীদের নিয়ে গঠিত হয় পিএলও।
শুরুর দিকে ফাতাহ সশস্ত্র উপায়ে ইসরায়েলি সরকারের বিরোধিতা করলেও পরে দলটি ১৯৮০-এর দশকে কূটনৈতিক উপায়ে সংকট সমাধানের চেষ্টা করে।
যা শেষ পর্যন্ত অসলো চুক্তিতে গড়ায় অর্থাৎ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেয়া হয়। যদিও ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল হামাস।
মৌলিক পার্থক্য
ফাতাহ ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয় এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ নম্বর প্রস্তাবনার পক্ষে সম্মতি জানায়।
১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধ বা আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েল যে অঞ্চলগুলো দখল করেছিল সেখান থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রত্যাহারের বিষয়ে ওই প্রস্তাবনায় উল্লেখ ছিল।
সেই যুদ্ধে ইসরায়েল সিনাই উপদ্বীপ, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম, গাজা উপত্যকা এবং গোলান মালভূমির বেশিরভাগ অংশ দখল করে।
অর্থাৎ এই যুদ্ধের মাধ্যমে আগে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন যতটুকু অঞ্চল ছিল তার চেয়ে তিনগুণ বেশি অংশ দখল করে নেয় ইসরায়েল।
অন্যদিকে হামাস ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয় না। বরং এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি তাদের ১৯৮৮ সালের প্রতিষ্ঠা সনদে বর্তমান ইসরায়েলসহ ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত একটি নতুন নথিতে তারা ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের আগে বিদ্যমান সীমানাকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ভিত্তি হিসাবে স্বীকার করে। যেখানে জেরুজালেম হবে রাজধানী।
নথিতে জোর দেওয়া হয়েছে যে, হামাসের লড়াই ইহুদিদের বিরুদ্ধে নয় বরং “দখলকারী ইহুদিবাদী হানাদারদের” বিরুদ্ধে।
দুটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য একটি একক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন। কিন্তু তাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টতই ভিন্ন।
ফাতাহ, কখনও কখনও আল-ফাতাহ নামে পরিচিত, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) এই বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতা হলেন, মাহমুদ আব্বাস। তিনি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
ফাতাহ নিজেদের একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এজন্য তারা ইসরায়েলিদের সাথে আলোচনা করতে পারে সেইসাথে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশ নিতে পারে।
যেখানে কিনা হামাস ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এবং একটি ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সশস্ত্র পথ বেছে নিয়েছে।
“দ্বিমুখী মতভিন্নতা”
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজা থেকে শুরু হওয়া সহিংস হামলার বিরোধিতা করেছেন ফাতাহ নেতারা। এ কারণে হামাসের মনে করে, ফিলিস্তিনের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একটি “দুর্নীতিগ্রস্ত” প্রতিনিধি।
নিজেদের লক্ষ্য অর্জন করতে না পারার পেছনে এই দুই দল একে অপরকে দোষারোপ করে।
ওয়াশিংটন ডিসির, আরব সেন্টারের, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল কর্মসূচির প্রধান ইউসেফ মুনায়ার বলেছেন, এই দুটি দল “বিশ্বকে ঘিরে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। সেইসাথে মতাদর্শ ও জনমত ঘিরেও তাদের মতভিন্নতা রয়েছে।”
“উভয়ই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরোধিতা করে, কিন্তু উভয়ই তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভিন্ন উপায়ে বিশ্বাস করে,” তিনি উল্লেখ করেন।
মুনায়ার বলেন, সমস্যা হল “মৌলিক পার্থক্যগুলো বেশ প্রকট।”
এতটাই বিরোধপূর্ণ, যে কারও কারও ধারণা ফাতাহ “ইসরায়েলিদের নিরাপত্তা দেয়ার ঠিকাদারি নিয়েছে” কারণ এতদিনেও কোন সুনির্দিষ্ট ফলাফল না দেখে তারা হতাশ।
বরং তারা মনে করে যে ইসরায়েলের সাথে আলোচনার ফলে ফিলিস্তিনের লাভের লাভ কিছুই হয়নি বরং ইসরায়েল তাদের দখল চালিয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, তারা হামাসকে সন্ত্রাসীদের গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচনা করে। কারণ ইসরাইলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে এমন সম্ভাব্য অগ্রগতিকে তারা ঠেকিয়ে রেখেছে।
অসলো চুক্তি
কয়েকজন বিশ্লেষকের মতে, হামাস এবং ফাতাহ’র মধ্যে দ্বন্দ্বের সূচনা হয়েছিল ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির সময় থেকে।
অসলো চুক্তিকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে অস্থায়ী শান্তি চুক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
এর মাধ্যমেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। যার বর্তমানে সভাপতিত্ব করছেন মাহমুদ আব্বাস।
ওই চুক্তির মাধ্যমে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকার কিছু অংশের উপর সীমিত কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়।
চুক্তিটি পিএলও নেতা ইয়াসির আরাফাত এবং নির্বাসনে থাকা অন্যান্য ফিলিস্তিনিদের দেশে ফেরার অনুমতি দেয়। অনেকেই এই চুক্তিকে একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তি অর্জনের সূচনা হিসেবে দেখেছেন এবং এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
হামাসসহ যারা এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিল তারা মনে করে, এই চুক্তির মাধ্যমে “ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে ফিলিস্তিনের জাতীয় স্বার্থকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।”
এর ফলে হামাস এবং ফাতাহ’র মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়ে ওঠে যা আজও অব্যাহত রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ওই চুক্তির মাধ্যমে হামাস ও ফাতাহ “পয়েন্ট অফ নো রিটার্নে” চলে গিয়েছে অর্থাৎ তাদের মধ্যে বৈরিতা নিরসনের আর কোন পথ খোলা থাকলো না।
“অর্থ এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের” লড়াই২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের উপর আকস্মিক হামলা চালানোর পর, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে।
কিছু পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, হামাস এবং ফাতাহ’র মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে ইসরায়েল উপকৃত হচ্ছে। এমনকি এর মাধ্যমে তারা নিজেদের “শত্রুকে দুর্বল” করতে উৎসাহিত হচ্ছে।
অন্যদের ধারণা, ফিলিস্তিনের এই দুই দলের বৈরিতার মূল কারণ হল নেতৃত্বের সংঘাত।
মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের (এমইআই) জ্যেষ্ঠ গবেষক এবং পলিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান কাটুলিস বিবিসি মুন্ডোকে বলেছেন, “বৈরিতা হল ক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত বিষয়।”
তার মতে, “এর সাথে আদর্শগত পার্থক্য থাকার কোন সম্পর্ক নেই। এটি মূলত দুই দলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। যারা নিজেদের অঞ্চলে সমর্থন আদায় করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।”
এক কথায় বৈরিতা মানেই হল “অর্থ এবং অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে রয়েছে”, এটাই মূলত ক্ষমতার মূল ভিত্তি।
মি. কাটুলিসের মতে, উভয় দলেরই গ্রহণযোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে যা তাদের কর্মকাণ্ডে গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে। এই কারণেই ফাতাহ এবং হামাসের মধ্যে ফাটল ক্রমশ বাড়ছে।
এই দ্বন্দ্ব ফিলিস্তিনের স্বার্থকে প্রভাবিত করছে। কারণ এটি “অভিজাতদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব।” তিনি জানান।
“তারা অনেক জনপ্রিয় সমর্থন হারিয়েছে কারণ কোন দলই দীর্ঘমেয়াদী সমাধান আনতে পারেনি,” বলেছেন কাটুলিস৷
ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হতাশা
হামাস এবং ফাতাহ’র মধ্যে এই বৈরিতা বা দ্বন্দ্ব ফিলিস্তিনের স্বার্থকে নানাভাবে প্রভাবিত করছে।
নাথান ব্রাউন ব্যাখ্যা করেছেন, “দুই দলের এই বিভক্তি ফিলিস্তিনিদের গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। তারা কাকে দোষারোপ করবে সাধারণ মানুষের মধ্যে সেটা নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে।”
যখন তারা একে অপরের সাথে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়, তখন “তারা সমাধানের উপায় না খুঁজে, তাদের মতপার্থক্যের উপর জোর দেয়,” তিনি যোগ করেন।
পরিস্থিতি জটিল কারণ একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যে, কারা আসলে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব করছে।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের একটা বড় অংশ এই দেখে হতাশ যে তারা তাদের প্রত্যাশা এখনও অর্জন করতে পারেনি, না কূটনৈতিক উপায়ে না সশস্ত্র উপায়ে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই অচলাবস্থার কারণে হামাস তাদের সশস্ত্র প্রতিরোধের মাধ্যমে মানুষের ব্যাপক সমর্থন আদায় করতে পেরেছিল, অন্তত গাজায় তারা অনেক সমর্থন পায়।
বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষ হতাহত হওয়ার আগ পর্যন্ত হামাস এই সমর্থন পেয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, ৮৭ বছর বয়সী মাহমুদ আব্বাস প্রায় ২০ বছর ধরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন, এখন তার স্থলে পশ্চিম তীরের শীর্ষ নেতৃত্বে কে আসবেন?
এটাও বলা যাচ্ছে না, গাজায় ইসরায়েলের সাথে বর্তমান সংঘাতের অবসান হলে হামাস নেতাদের কী হবে?
অথবা নতুন পরিস্থিতির আলোকে পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকার তরুণ ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে তাও অজানা।
আপাতত, ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে সেখানকার রাজনীতি সবচেয়ে অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে রয়েছে।