শুক্রবার || ২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বঙ্গবন্ধু হত্যায় কুশীলবদের চিহ্নিত করতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ ৩১ আগস্ট ২০২৩, বৃহঃ, ১০:০১ অপরাহ্ণ । পঠিত হয়েছে ১২৯ বার।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দিনের স্মৃতিচারণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার পরিচিত একজন বললেন রাস্তায় এত আর্মি কেন? কিন্তু বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, কিছু সময় পরে শুনলাম মেজর ডালিম বলছে সেই ভয়ানক কথা। এর কিছুক্ষণ পরে দেখলাম আমার বাসার পেছনে রক্ষীবাহিনীর সদর দপ্তরের সামনে দুইটি ট্যাংক দাঁড়িয়ে রয়েছে। তখনও আসল ঘটনা বুঝতে পারিনি। যখন এই নৃশংস ঘটনা শুনলাম, তখন মনে হলো আমরা মুক্তিযোদ্ধারা কি বেঁচে আছি?
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত সেটি আমাদের ভালো করে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যায় কুশীলবদের চিহ্নিত করতে হবে। কারা এই ঘটনার নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করেছে, কারা এর উপকারভোগী সেটা আমাদের জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার আগে ছোট ছোট অনেক ইঙ্গিত পেয়েছি, কিন্তু তখন আমরা বুঝিনি। ভয়ানক একটি সর্বনাশ আসছিল সেটি আমরা বুঝতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনোদিন বিশ্বাস করতেন না যে বাঙালিরা তাকে হত্যা করতে পারে। তাই হয়েছিল। সেটিও দেখতে হয়েছিল। একটু হলেও প্রশান্তি হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যেদিন ফিরেছিলেন। তার ফিরে আসায় আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করেছিলাম। সেটিই হয়েছে। আমরা হৃদয়ে ধারণ করতাম যে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হবে। আমরা সেটি দেখে যেতে পেরেছি। এখনো যারা পলাতক রয়েছে তাদের চিহ্নিত করেছি। আশা করি ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করব।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ২১ আগস্টে আবারও হত্যার প্রচেষ্টা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২১ আগস্ট এর হামলায় বোমার পর বোমা ফুটিয়েও তারা যা চেয়েছিল সেটি পারেনি। আমাদের নেতা-কর্মীরা মানবঢাল করে সেটি ঠেকিয়ে দিয়েছে। তারপর মনে হয় আমাদের কপালের কালো দাগ মুছতে পারিনি। বঙ্গপোসাগরের সব পানি দিয়ে যদি বাংলাদেশকে ধৌত করি তারপরও কলঙ্ক মুছবে না।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য শেখ কবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু মানুষকে ভালোবাসতেন। তখন সাম্রাজ্যবাদ দেখলো যে, ভালোবাসা দিয়ে যদি একটি দেশকে স্বাধীন করতে পারে তাহলে সে বিশ্বকে যেকোনো সময় সাম্রাজ্যবাদকে নাড়া দিতে পারে। তাই তারা হিসেব করে দেখলো যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা দরকার। এতেই সাম্রাজ্যবাদ রাজাকারদের সঙ্গে হাত মেলালো।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধু ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি ভালোবাসা দিয়েই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে সারাজীবন ভালোবেসে গেছেন। তিনি মনে করতেন মানুষকে বিকশিত করার জন্য একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের দরকার। তাই তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রাম করেছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ আলম ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।