রবিবার || ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
তীব্র তাপদাহে সাতক্ষীরায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা
প্রকাশিতঃ ১৯ এপ্রিল ২০২৩, বুধ, ৪:১৬ অপরাহ্ণ । পঠিত হয়েছে ১২৪ বার।
সপ্তাহব্যাপি সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে চলছে তাপদাহ। ভুগর্ভস্ত পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় মটরে পানি উঠছে কম। খরা ও তাপদাহে মাটি ফেঁটে চৌচির। ফসলের ক্ষেত পরিচর্যা করতে কৃষককে মাঠে থাকাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ফসলের মাঠ। ঝরে যাচ্ছে আম ও লিচু। তবে যেকোন উপায়ে সেচ দেওয়ার পরামর্শকৃষি বিভাগের। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তীব্র তাপদাহে আম ও পাটের টার্গেট অর্জিত না হওযার আশঙ্কা রয়েছে জেলায়।
সাতক্ষীরা জেলা খামারবাড়ি সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরায় এবার চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার মে: টন। জেলায় আম বাগানের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৩০০। স্থানীয় জাতের আম ছাড়াও এ তালিকায় রয়েছে জেলার বিখ্যাত হিমসাগর,ল্যাংড়া ও আ¤্রপালি আম। এছাড়া লিচু চাষ হয়েছে ১১৩ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে,জেলায় পাট চাষ হয়েছে সাত হাজার ৪২৪ হেক্টর জমিতে। মাঠে ঝালের আবাদ হয়েছে ২৬৫ হেক্টর জমিতে। তিল চাষ হয়েছে ২২৭ হেক্টর জমিতে।
তাপদাহে আমের ক্ষতির বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মথুরেশপুর গ্রামের আম চাষি লিয়াকত আলী জানান,টানা দুই সপ্তাহের তাপদাহে তার পাঁচ হেক্টর জমির এক পঞ্চমাংশ আম ঝরে গেছে। বদ্দিপুর কলোনীর অঅবু জাফর জানান, বিদেশে আম পাঠানোর জন্য বিশেষ পরিচর্যা করা আম তাপদাহে বোটা শুকিয়ে পড়ে যাচ্ছে।
তালা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মনোরঞ্জন রায় জানান,তিনি তিন বিঘা জমিতে তোষা জাতের পাট ও বঙ্কিম বীজ লাগিয়েছিলেন। মাস খানেক আগে লাগানো এসব পাট এক ফুটের মত লম্বা হয়েছে। গতকাল মাঠে যেয়ে দেখি,অধিকাংশ পাটের চারার মাথা শুকিয়ে নুইয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান,আমাদের এলাকার মাঠে তাপদাহে ঝাল,বেগুন ও তিল গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি বৃষ্টি না হলে চাষিদের খুব ক্ষতি হবে।
কলারোয়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল বারি জানান, ভাল পটল উৎপাদন করতে গেলে ভাল পুরুষ ও স্ত্রী জাতের ফুল দরকার হয়। প্রতিদিন তারা পরাগায়নের সুবিধার্থে ভোরে স্ত্রী ফুল ছুঁইয়ে থাকেন। কিন্ত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত বাতাসে পটলের ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে উৎপাদন কমেছে। একইভাবে তীব্র তাপদাহের কারণে উচ্ছে উৎপাদন কমেছে। বরবটির অবস্থাও তথৈবচ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান,উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ইউনিয়নে-ইউনিয়নে আমরা চাষিদের এই বার্তা দিচ্ছি,যেকোনভাবে সেচ দিতে হবে। আর সেচ অবশ্যই রাত ৮টার পরে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কারণ তখন তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসে।