
শনিবার || ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
গাজায় স্থল অভিযান বাড়ালো ইসরায়েল, মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ
প্রকাশিতঃ ২০ মার্চ ২০২৫, বৃহঃ, ৯:৩৮ অপরাহ্ণ । পঠিত হয়েছে ৩২ বার।

বিমান হামলা জোরদার করার পর এবার গাজায় স্থল অভিযানের পরিধি বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এদিকে দুই দিনে গাজায় ৪৩০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে যে তাদের সৈন্যরা নেতজারিম করিডোর পর্যন্ত চলে গেছে যেটি গাজা উপত্যকাকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্ত করেছে।
গাজায় নতুন করে হামলার ফলে জানুয়ারি থেকে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির কার্যত সমাপ্তি ঘটেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল “পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছে” এবং “এটি কেবল শুরু”।
হামাসের দিকে দোষারোপ করে তার বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাস বারবার অস্বীকৃতি জানানোর পাশাপাশি মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর সেনাবাহিনীকে তাদের বিরুদ্ধে “কঠোর পদক্ষেপ” নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে যে হামাস এখনও ৫৯ জন জিম্মিকে ধরে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে হামাসের যোদ্ধাদের পুনর্গঠিত হওয়ার তৎপরতা বেড়েছে বলেও খবর প্রকাশিত হয়েছে।
অন্যদিকে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীরা ইসরায়েলে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের দায় স্বীকার করেছে। যদিও সেটা প্রতিহত করা হয়েছে।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে হুথিদের সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তেল আবিবের কাছে বেন গৌরি বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
বিমান হামলার পর স্থল অভিযান
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে যে তাদের সৈন্যরা গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল বিভক্ত করে যে নেতজারিম করিডোর সেদিকে এগিয়েছে।
গাজায় “উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে আংশিক বাফার (বিশেষ নিয়ন্ত্রিত এলাকা)” তৈরির জন্য টার্গেট করে স্থলভাগে তৎপরতা শুরু করার কথা জানিয়েছে তারা।
উত্তর গাজার বেইত হানুনসহ সামরিক বাহিনী যেসব এলাকায় স্থানান্তরিত হচ্ছে সেখান থেকে মানুষজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্থল সীমান্তের তিন পাশের যে বিশাল এলাকাজুড়ে মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তাতে বোঝা যাচ্ছে যে শিগগিরই বড় পরিসরে একটি স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।
এই আদেশের কারণে বাস্তুচ্যুত যেসব পরিবার যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ি ফিরে এসেছিল তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরিবারগুলোর যার হাতে যা ছিল তা নিয়েই পায়ে হেঁটে, ঠেলাগাড়ি ও অন্যান্য বাহনে করে ইসরায়েলি বাহিনীর অবস্থান নেয়া সেসব জায়গা থেকে চলে যেতে দেখা গেছে।
হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য মার্চের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
এবার বড় পরিসরে বিমান হামলার পর স্থল অভিযানে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে
আকস্মিক হামলায় অপ্রস্তুত গাজাবাসী
দক্ষিণ গাজায় ফিলিস্তিনি ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. সাবরিনা দাস হামলা সম্পর্কে বিবিসিকে বলেন, “এটা খুবই আকস্মিক ছিল… মানসিকভাবে সবাই ভেঙে পড়ে কারণ আমরা বুঝতে পারছিলাম যে এর মধ্য দিয়ে আবার যুদ্ধ শুরু হলো।”
ডা. দাস বলেন, নাসার হাসপাতালে তার সহকর্মীরা “সারা রাত জেগে অস্ত্রোপচার করছিলেন” কারণ “আবারও ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে।”
গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাকুত বিবিসি আরবি বিভাগকে বলেন, আক্রমণ এতটাই আকস্মিক ছিল যে চিকিৎসাকর্মীরা একেবারেই প্রস্তুত ছিল না এবং তাদের কর্মীসংখ্যাও অপর্যাপ্ত ছিল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি কোনদিকে
মার্চের শুরুর দিকে ইসরায়েলি জিম্মি এবং ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কীভাবে পরের ধাপে এগিয়ে নেওয়া যায় এ নিয়ে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
চুক্তির তিনটি ধাপের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা ছয় সপ্তাহ আগে শুরু হওয়ার কথা ছিল যা হয়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়িয়ে আরও জিম্মিদের মুক্তি দিতে চুক্তির কিছু শর্ত পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের উদ্দেশ্য ছিল স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করা।
কিন্তু হামাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যস্থতায় এই প্রস্তাবিত চুক্তির পরিবর্তনকে প্রত্যাখ্যান করে, এটিকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করে।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার দেইর আল বালাহ এলাকায় একটি বিস্ফোরণে তাদের এক কর্মীসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই ঘটনার দায় অস্বীকার করে বলেছে, এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হতে পারে।
ইউএন অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) বলেছে যে একটি “বিচ্ছিন্ন” অবস্থানে থাকা ভবনটিতে একটি “বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হয়েছে বা গুলি করা হয়েছে”। কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে সে সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারেনি।
ইউএনওপিএস-এর প্রধান, হোর্হে মোরেইরা দা সিলভা বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন “এটি একটি দুর্ঘটনা নয়”, সঙ্গে যোগ করেছেন যে গাজার পরিস্থিতি “অসংবেদনশীল”।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এর পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
এ জাতীয় আরো সংবাদ

পহেলগাম হামলার জন্য পাকিস্তানের দিকেই আঙুল ভারতের
প্রকাশিতঃ ২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহঃ, ১২:১৭ পূর্বাহ্ণ
কাশ্মীরে হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২৪
প্রকাশিতঃ ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গল, ১১:০৪ অপরাহ্ণ
দিনাজপুরে ভবেশ রায়ের মৃত্যুকে নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ বিতর্ক, কী ঘটেছিলো...
প্রকাশিতঃ ২১ এপ্রিল ২০২৫, সোম, ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ
ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে
প্রকাশিতঃ ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্র, ১১:২৪ অপরাহ্ণ
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্যে ভারতের কড়া সমালোচনা
প্রকাশিতঃ ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্র, ১১:১৭ অপরাহ্ণ
গাজায় স্থল অভিযান বাড়ালো ইসরায়েল, মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ
প্রকাশিতঃ ২০ মার্চ ২০২৫, বৃহঃ, ৯:৩৮ অপরাহ্ণ